সারাবিশ্বে ALS এর আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ ইতিমধ্যে খুব পপুলার। বিল গেটস থেকে শুরু করে সব ধরনের সেলিব্রেটিরা এই আইস বাকেট চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহন করেছে। সবাই চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করার পর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে একটি ট্যাগ (#ALSIceBucketChallenge) ব্যবহার করেছে ।
কিন্তু একবারও কি চিন্তা করেছেন? হটাৎ করে এই ছোট্ট বিষয়টি আজ সারাবিশ্বে কিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে? যে যার অবস্থান থেকে এই আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ অংশগ্রহন করেছে। কিন্তু কেন? কিভাবে এটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল সবার মাঝে ? কেনইবা মানুষ অংশগ্রহন করল ? এইরকম হাজারো প্রশ্ন জন্ম নিবে। এটা থেকে আমরা কি শিক্ষা নিলাম? শুধু বিনোদন নিলাম? হ্যাঁ, আপনি যদি সাধারণ পাবলিক হয়ে থাকে। তবে বিনোদন পর্যন্তই আপনার দৌড়। কিন্তু আপনি যখন একজন ইন্টারনেট মার্কেটার। আপনার দৌড় এখানে শেষ নয়। বরং আপনার দৃষ্টি থাকবে আরও গভীরে। এটি নিয়ে আলোচনা করবো। আমার লেখার মূল বিষয় আজকে এটাই।
আমরা ৬ টি বিষয় শিক্ষা নিবো। যেগুলো আমাদের বিজনেসকে প্রমোট করার জন্য হাতিয়ার হতে পারে। অথবা বিজনেস ষ্ট্রাটেজি তৈরিতে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব বহন করবে।
আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ থেকে আমরা সর্বপ্রথম কি শিক্ষা নিবো? উত্তর: ভিডিও মার্কেটিং। প্রত্যেকে আইস বাকেট চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহন করার পর সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিডিও শেয়ার করছে। মানুষ ভিডিওগুলো শেয়ার করছে । ঠিক এভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র । সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, ভিডিও মার্কেটিংটা বর্তমানে খুব ইফেক্টিভ। আপনার বিজনেস রিলেটেড বিজনেসগুলোর যেসব ভিডিও ইউটিউবে আছে, সেগুলো দেখতে হবে। কোন ধরনের ভিডিও মানুষ লাইক করতেছে, এটা খুঁজে বের করতে হবে। এবং এগুলো বিবেচনায় এনে আপনার মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তৈরি করতে হবে। তারপর সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে শেয়ার করতে হবে। যদি মানুষ আপনার ভিডিওটি লাইক করে, তবে আপনার বিজনেস প্রমোট হয়ে গেছে।
মজাদার বা ফানি
আইস বাকেট চ্যালেঞ্জে দেখা যায়, মানুষ বরফ পানি তার মাথার উপর ঢালছে। মানুষ হাসছে। অর্থাৎ ভিডিও দেখে তারা মজা পেয়েছে। যার কারনে ভিডিওগুলো খুব দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া তে ছড়িয়ে পড়ছে। অর্থাৎ মানুষ ফানি ভিডিওগুলো যে খুব বেশি পছন্দ করে, সেটা এই চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে বোঝা যায়। তাই, আপনার বিজনেস এর জন্য ভিডিও তৈরি করবেন। উপাদান খুঁজে পেয়েছেন এখানে? অবশ্যই পেয়েছেন আশা করি। মানুষ যেন আপনার ভিডিওটা উপভোগ করে, সেটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আপনার যে টার্গেট সেটা খুব দ্রুত পূরণ হবে। কারন আপনি আপনার মার্কেটিং প্ল্যানটা সেইভাবে সাজিয়েছেন। যা মানুষের মনের ভেতরটা স্পর্শ করে।
সেলিব্রেটি আবেদন
আইসবাকেট চ্যালেঞ্জটি কিন্তু এত বেশি এগুতে পারতো না। যদি না বিশ্বের সেরা সেরা সব সেলিব্রেটিরা অংশগ্রহন না করতো। সেলিব্রেটিরা যখন শুরু করেছে, তখন বিভিন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আর সবাই একটু মজার করতে চায়। যার দরুন একজনের দেখাদেখি অনেকে অংশগ্রহন করেছে। একই সাথে তারা উপভোগ করেছে এবং সেই সাথে এএলএস তাদের টার্গেটে পুরনে সক্ষম হয়েছে। অর্থাৎ মজার ভিডিও এর সাথে সেলিব্রেটি থাকে তবে এটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। আর আপনার বিজনেসও খুব দ্রুত এগিয়ে যাবে।
নির্দিষ্ট সময়
আইস বাকেট চ্যালেঞ্জটি যখন শুরু হয়েছিল তখন বেশিরভাগ দেশে শীতকালীন আবহাওয়া বিরাজ করছে। আর এই সময়ে ঠাণ্ডা বরফ পানি শরীরে ঢালছে। যার কারনে আরও বেশি নজরে পড়েছে মানুষের। অর্থাৎ এখানে টাইমিংয়ের একটা বিশাল ব্যাপার জড়িয়ে আছে। আপনি যখন আপনার বিজনেস এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে বেছে নিবেন, তখন খুব ভালো পারফর্ম করতে হলে, সময় বিবেচনা করা মার্কেটিং করতে হবে। মানুষ যেন ওই পরিস্থিতির সাথে আপনার মার্কেটিং পদ্ধতিটা সহজভাবে নিতে পারে।
দাতব্য সংস্থা
আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ থেকে এটা স্পষ্ট যে, মানুষ দাতব্য সংস্থার জন্য যদি কিছু করে সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে। তবে খুব দ্রুত সেটা ছড়িয়ে পড়ে। কারন মানুষ এই ধরনের জিনিসগুলা পছন্দ করে। আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ প্রাথমিক দিকে সচেতন করার লক্ষে কাজ করেছে। আর যখন এটি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র, তখন মজাসহ এএলএস এর সচেতন করার লক্ষ্য কাজ করেছে। এটা থেকে স্পষ্ট যে, মানুষ দাতব্য সংস্থা থেকে যদি কিছু করে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা হয়, তবে সেটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আর এই পদ্ধতিটি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন। এতে আপনার বিজনেস যেমন প্রমোট হবে একই সাথে দাতব্য সংস্থাগুলো এগিয়ে যাবে।
লক্ষ্য বা গোল
আপনারা হয়তো জানেন, আইস বাকেট চ্যালেঞ্জে ডোনেশন নেওয়ার একটা লক্ষ্য ছিলো। তারা একটা লক্ষ্য ফিক্সড করে রেখেছিল। এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে খুব দ্রুত। কারন মানুষ চেয়েছিল, এই লক্ষ্য দ্রুত পুরন হোক। বোঝা গেলো, আপনি যখন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে আপনার বিচরন করবেন, বিশেষ করে মার্কেটিংয়ের উদ্দেশ্যে, তখন একটা লক্ষ্য স্থির করে নিন। এবং লক্ষ্য পুরনের জন্য প্ল্যান দাঁড় করান। সেগুলাকে সম্পন্ন করুন মানুষের মনের চাওয়ার অনুকূলে।
আলোচনাটা থেকে আমাদের বুজঝতে বাকী নেই, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যটফর্ম ব্যবহার যদি বিজনেসকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে চান, তবে আপনাকে ভিডিও, মজাদার বিষয়, লক্ষ্য, সেলিব্রেটি, দাতব্য সংস্থা একসাথে নিয়ে কাজ করতে হবে। সবগুলোর একটা পারফেক্ট কম্বিনেশন করে নিতে হবে। আর হ্যাঁ। অবশ্যই তা আপনার সঙ্গতির বাইরে গিয়ে নয়। বরং আপনার সক্ষমতার ভিতরে এটা করতে হবে। যদি সবগুলো একত্র করে পারফেক্ট কম্বিনেশন করে আপনি এগুতে পারেন, তবে আপনি নিশ্চিত সফল হবেন। কারন কি? এই শিক্ষাটা আমরা ইতোমধ্য এএলএস থেকে পেয়েছি। তারা লক্ষ্য পৌছাতে পেরেছে শুধুমাত্র এই বিষয়গুলোর পারফেক্ট কম্বিনেশনের জন্য ।
সুতরাং আপনিও পারবেন। কিন্তু এর জন্য আপনার মার্কেটিং প্ল্যান হতে হবে সুগঠিত, সুচিন্তিত। একটা অবকাঠামো দাঁড় করাতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে । যার উপর ভিত্তি করে আপনার সবগুলো কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবেই দেখা যাবে, আপনি সহজেই আপনার লক্ষ্য পৌঁছাতে পেরেছেন।
আশা করি সঠিকভাবে আপনার বিজনেস কে প্রমোট করতে পারবেন। আপনার যদি কোন আইডিয়া থাকে, তবে সেটাও শেয়ার করতে পারেন কমেন্ট বক্সে। আমি অবশ্যই আপনার ক্রেডিট দিয়ে পোস্টটি ইডিট করে দিবো। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। আপনার বিজনেস যেন আরও ভালো হয়, সেই কামনা রেখে আজকের মত এখানে সমাপ্তি। দেখা হবে অন্য আরেকটা লেখাতে। আল্লাহ হাফেজ।
0 comments:
Post a Comment